সাদা হাঙ্গর
Great white shark সময়গত পরিসীমা: Late Miocene–Recent | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | অ্যানিম্যালিয়া (Animalia) |
পর্ব: | কর্ডাটা (Chordata) |
শ্রেণি: | Chondrichthyes |
মহাবর্গ: | Selachimorpha |
বর্গ: | Lamniformes |
পরিবার: | Lamnidae A. Smith, 1838 |
গণ: | Carcharodon (Linnaeus, 1758) |
প্রজাতি: | C. carcharias |
দ্বিপদী নাম | |
Carcharodon carcharias (Linnaeus, 1758) | |
Global range as of 2010 | |
প্রতিশব্দ | |
|
গ্রেট হোয়াইট শার্ক(বৈজ্ঞানিক নাম:Carcharodon carcharias,ইংরাজি নাম:Great white shark,বাংলা অনুবাদে:মহান সাদা হাঙর বা সাদা হাঙর, আরো কিছু প্রচলিত নাম:গ্রেট হোয়াইট,হোয়াইট পয়েন্টার,হোয়াইট শার্ক,হইট ডেথ) এরা বৃহত্তর lamniform(ল্যামনিফ্রম) হাঙরের একটি প্রজাতি যেটিকে সমস্ত প্রধান মহাসাগরের উপকূলবর্তী পৃষ্ঠ জলের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় । গ্রেট হোয়াইট শার্ক প্রধানত এর আকার জন্য পরিচিত হয়, একটি প্রাপ্তবয়স্ক গ্রেট হোয়াইটের দৈর্ঘ্য ৬.১ মিটার (২০ ফুট) হয় এবং ওজনের দিক দিয়ে ২,২৬৪ কেজি (৫,০০০ পাউণ্ড) হয়,এই হাঙর ১৫ বছর বয়সে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় এবং সাধারণত ৩০ বছর বাঁচে ।
গ্রেট হোয়াইটকে পৃথিবীর বৃহত্তম শিকারী মাছ হিসাবে ধরা হয় (তর্কসাপেক্ষ) সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণিবিদের মুখ্য শিকারী এরা এবং খাদ্য সুশৃংখলে এরা সর্বোচচ শ্রেনীর খাদক । এরা স্তন্যপায়ী ছাড়াও মাছ ও সামুদ্রিক পাখি শিকার করে । এরা Carcharodon গনের একমাত্র প্রজাতি এবং সমস্থ হাঙর প্রজাতির মধ্য এরাই একমাত্র প্রজাতি যেটি জলের উপরও নিচে দুই জায়গাতেই শিকার করায় দক্ষ ।মানুষের উপর আক্রমণে এদের অবস্থান প্রথম স্থানে । আইইউসিএন তালিকায় একটিকে ঝুঁকির মধ্যে থাকা প্রজাতি হিসাবে ধরা হয় ।
পিটার বেঞ্চলি রচিত বিখ্যাত উপন্যাস জছ যেটি জার্সি সমুদ্রতীরে হাঙ্গর আক্রমণের ঘটনার উপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছিল এবং স্টিভেন স্পিলবার্গ এর ১৯৭৫ সালে তৈরি চলচ্চিত্র জসJAWS, এই হাঙরের প্রতি মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছিল যে কারণে মানুষ এদের আদম খোর হিসাবেই ভেবে বসে । বাস্তবে মানুষ এদের প্রথা গত শিকারের বাইরে তাই মানুষ শিকারের উপর এরা বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেনা মানুষের উপর আক্রমণে যে ঘটনা গুলি ঘটেছে তার বেশিরভাগই ভুল বুঝার উপর ভিত্তি করে ।
নামকরণ
[সম্পাদনা]গ্রেট হোয়াইট সবসময় Carcharodon carcharias নামে পরিচিত ছিল না । ১৭৫৮ সালে Carolus Linnaeus প্রথম গ্রেট হোয়াইট এর বৈজ্ঞানিক নাম দেন তার দেওয়া নামটি ছিল Squalus carcharias । পরে স্যার অ্যান্ড্রু স্মিথ, 1833 সালে এর জেনেরিক(জাতিবাচক) নাম হিসাবে Carcharodon দিয়েছিলেন, বর্তমানে এদের বৈধ বৈজ্ঞানিক নাম Carcharodon carcharias । Carcharodon এসেছে গ্রীক শব্দ karcharos থেকে যার মানে ধারালো jagged এবং odous মানে দাঁত। এদের প্রচলিত নাম গুলির মধ্য আছে গ্রেট হোয়াইট,হোয়াইট পয়েন্টার,হোয়াইট শার্ক,হোয়াইট ডেথ ইত্যাদি ।
বিভিন্ন দেশে এদের আরো ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমন devorador ডি hombres (স্প্যানিশ), গ্র্যান্ড requin blanc (ফরাসি), hohojirozame (জাপানি), hvithai (নরওয়েজিয়ান), jaquentón Blanco (স্প্যানিশ), Kalb bahr (আরবি), kelb IL - Bahar abjad (মাল্টিস), manzo De Mar (ইতালীয়), menschenhai (জার্মান), niuhi (হাওয়াইয়ান), peshkagen njeringrenes (আলবেনিয়ান), rechin mancator ডি oameni (Rumanian), requin blanc (ফরাসি), sbrillias (গ্রিক), squalo Bianco (ইতালীয়), tiburón Blanco (স্প্যানিশ), valkohai (ফিনিশ), vithaj (সুইডিশ), weißer Hai (জার্মান), witdoodshaai (আফ্রিকান্স), এবং zarlacz ludojad (পোলিশ) ।
উত্পত্তি এবং জীবাশ্ম
[সম্পাদনা]গ্রেট হোয়াইট শার্ক এর উত্পত্তি হয় মধ্য-মিইয়সিন (mid-Miocene) যুগে । গ্রেট হোয়াইট শার্ক এর নিকটতম জানা জীবাশ্ম টি ১৬ মিলিয়ন বছর পুরনো । যদিও এ তথ্যের উপর এখনও বিতর্ক চলছে । অনুমান করা হয় গ্রেট হোয়াইট শার্ক এর পূর্বপুরুষ এক বিশাল আকার প্রাগৈতিহাসিক হাঙর, মেগলাডন এর মতন । শারীরিক আকার ও অঙ্গপ্রতঙ্গ এর দিক দিয়ে এই দুই হাঙর ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এর কারণে অনেক বৈজ্ঞানিক বিশ্বাস করে মিগলডনই আধুনিক গ্রেট হোয়াইট এর নিকট তম আত্মীয়, যে কারণে সাম্প্রতিক কালে এদের Carcharodon megalodon ও বলা হয় । তবে বর্তমানে কিছু বৈজ্ঞানিক গ্রেট হোয়াইট ও মেগলাডন কে দূরবর্তী আত্মীয় বলে ব্যাখ্যা করেছেন । এছাড়া ও গ্রেট হোয়াইট এর সাথে প্রাচীন মকো শার্ক এর আরো বেসি ঘনিষ্ঠতা পাওয়া গেছে । বিলুপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রজাতি Carcharodon hubbelli এর একটি গোটা চোয়াল ২২২ টা দাঁত এ ৪৫ টা কশেরুকা ১৯৮৮ সালে অবিষ্কার হলে মেগলাডন তত্ত্ব টা গুরুত্ব লাভ করে ।এখানে উল্লেখ যজ্ঞ আধুনিক গ্রেট হোয়াইট, মেগলাডন থেকে আকারে অনেকটাই ছোট ।
বিচরন স্থান
[সম্পাদনা]যে সব উপকূলে জলের তাপমাত্রা ১২ এবং ২৪ °C (৫৪ এবং ৭৫ ° ফাঃ) মধ্যে, সেসব উপকূলবর্তী এবং সমুদ্রতীর হইতে দূরবর্তী জলের মধ্যে বাস করে এরা । এদের বিচরন ক্ষেত্র এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে(আটলান্টিক উত্তরপূর্ব ও ক্যালিফোর্নিয়া)ক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, ওশেনিয়া, চিলি, এবং ভূমধ্য সাগরে এদের ব্যাপক ভাবে দেখা যায় কারণ এসব এলাকার তাপমাত্রা গ্রেট হইট এর জন্য খুবই অনকুল আটলান্টিকে এদের দেখা মেলে নিউফাউন্ডল্যান্ড থেকে ফ্লোরিডা,মেক্সিকো উত্তর উপসাগর, বাহামা এবং কিউবার পাশাপাশি ব্রাজিল থেকে আর্জেন্টিনা এবং পূর্ব আটলান্টিক মধ্যে ফ্রান্স থেকে ভূমধ্য সহ দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারত মহাসাগরে এদের দেখা মেলে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং Seychelles দ্বীপপুঞ্জ, সেই সাথে Réunion ও মরিশাসে ও । পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে এদের দেখা মেলে নিউজিল্যান্ড এবং মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে । কেন্দ্রীয় প্যাসিফিকে এদের দেখতে পাওয়া যায় হাওয়াইয়ান দ্বীপে এবং আলাস্কা থেকে পূর্ব প্যাসিফিক মধ্যে চিলি ক্যালিফোর্নিয়া এবং পানামা উপসাগরে এদের দেখা যায় ।
এই হাঙর জলের উপরের অংশে বিচরন করে । এদের সাধারণত সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত এলাকায় দেখা যায় পৃষ্ঠ থেকে ৭৭৫ ফুট) গভীরত্বে । সমুদ্রের epipela স্তরে এর বিচরন করে, খোলা সমুদ্রে ১,২০০ মিটার (৩.৯০০+ ফুট ) গভীরে এদের দেখতে পাওয়ার রেকর্ড আছে । গ্রেট হোয়াইট একটা উপকূলবর্তী প্রজাতি এ তথ্য পুরোপুরি সত্য নয় । একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেকা গেছে ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রেট হোয়াইট শার্ক বাজা ক্যালিফোর্নিয়া থেকে হাওয়াই এ চলে আসে এই জায়গাটাকে এই জন্য হোয়াইট শার্ক ক্যাফে বলা হয় এখানে গ্রেট হোয়াইট শার্ক ১০০ দিন মতন থাকে তারপর আবার ফিরে আসে বাজা তে এই সফরে এরা খুব ধীরে ধীরে সাঁতার কাটে এবং ৯০০ মিটার (৩,০০০ ফুট) গভীরে থেকে চলে। গন্তব্যে আসার পর, তারা আচরণ পরিবর্তন করে হাঙর গুল তখন প্রায় ৩০০ মিটার (১,০০০ ফুট) গভীরে সাতার কাটতে থাকে দশ মিনিটের জন্য । অনুরূপ একটি গবেষণায় একটি গ্রেট হোয়াইট শার্ক কে অনুসরণ করে দেখা যায় সেটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলে সাতরে যায় এবং ২০,০০০ কিলোমিটার (১১,০০০ NMI ১২,০০০ মাইল) এর এই সফরে সময় লাগে ৯ মাস । এই পর্যবেক্ষণ গ্রেট হোয়াইট হাঙর এর ব্যাপারে অনেক প্রথাগত তত্ত্বের বিরুদ্ধে যায় এবং এই গবেষণায় এই সম্ভাবনা প্রকাশ করে যে গ্রেট হোয়াইট গুষ্টির মধ্যে ও মিথস্ক্রিয়া সম্ভব যা পূর্বে বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে মনে করা হত । যদিও তাদের মাইগ্রেশন কারণ এবং কেন তাদের গন্তব্য তা এখনও অজানা । সম্ভবত প্রজনন এবং খাদ্যের জন্য তার এমন করে ।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Rigby, C.L.; Barreto, R.; Carlson, J.; Fernando, D.; Fordham, S.; Francis, M.P.; Herman, K.; Jabado, R.W.; Liu, K.M.; Lowe, C.G.; Marshall, A.; Pacoureau, N.; Romanov, E.; Sherley, R.B.; Winker, H. (২০১৯)। "Carcharodon carcharias"। বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা (ইংরেজি ভাষায়)। আইইউসিএন। 2019: e.T3855A2878674। ডিওআই:10.2305/IUCN.UK.2019-3.RLTS.T3855A2878674.en । সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ "Appendices | CITES"। cites.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৪।
Heupel, M. (2005). Carcharhinus melanopterus. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on September 15, 2009.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ARKive - Images and movies of the great white shark, Carcharodon carcharias
- Envirofacts: Great white shark
- In-depth article: Shark's Super Senses from the PBS Ocean Adventures site
- Are great whites descended from mega-sharks?
- "Great White Sharks - The Truth" by documentary maker Carly Maple - Australian focus
- South African Marine Predator Lab a research institute studying marine top predators.
ভিডিও
[সম্পাদনা]- Nature's Perfect Predator – Great White Shark from Discovery Channel
- ইউটিউবে White Shark Cage Dive in Gansbaai, South Africa
- Riding a Great White[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] from Discovery Channel
- ইউটিউবে Wild – The Whale That Ate Jaws (This video is about a documented interaction of an Orca with an inexperienced white shark)
- আইইউসিএন লাল তালিকার সংকটাপন্ন প্রজাতি
- জাপানের মাছ
- বিশ্বজনীন মাছ
- ১৭৫৮-তে উল্লেখিত প্রাণী
- ইউরেশিয়ার প্রাণীজগৎ
- আফ্রিকার প্রাণীজগৎ
- উত্তর আমেরিকার প্রাণীজগৎ
- দক্ষিণ আমেরিকার প্রাণীজগৎ
- অস্ট্রেলিয়ার প্রাণীজগৎ
- ওভোভিভিপ্যারোয়াস মাছ
- অবস্করক
- ভিডিও ক্লিপ ধারণকারী নিবন্ধ
- হাঙ্গরের প্রজাতি
- শীর্ষ খাদ্যশিকারী প্রাণী
- ১৭৫৮-এ বর্ণিত মাছ
- কার্ল লিনিয়াস কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা