নিত্যযাত্রী শহর
নিত্যযাত্রী শহর বলতে এমন একটি লোকালয়কে বোঝায়, যেটি বাণিজ্যিক বা শিল্পভিত্তিক নয়, বরং মূলত আবাসিক প্রকৃতির, যেখানকার অধিবাসীরা প্রতিদিন অনেক সময় ধরে দূরে অবস্থিত মূল নগরীতে অবস্থিত কর্মক্ষেত্রে যাওয়া-আসা করেন (নিত্যযাত্রা দেখুন)।
সমার্থক নাম
[সম্পাদনা]নিত্যযাত্রী শহরকে ইংরেজিতে কম্যুটার টাউন বলা হয়। এছাড়া এটিকে ইংরেজিভাষী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে "বেডরুম কমিউনিটি"[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] (অর্থাৎ "শয়নকক্ষ সম্প্রদায়"), "বেডরুম টাউন" (অর্থাৎ "শয়নকক্ষ শহর"), "বেডরুম সাবার্ব" (অর্থাৎ শয়নকক্ষ শহরতলী), "ডর্মিটরি টাউন" ("আবাসিক শহর"), বা "ডর্মিটরি সাবার্ব" ("আবাসিক উপশহর") নামে ডাকা হতে পারে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] জাপানে নিত্যযাত্রী শহরকে ওয়াসেই-এইগো বা "বেদ্দোতাউন" ("বিছানা শহর") নামে ডাকা হতে পারে।[২] ১৯৫০-এর দশকে এগুলিকে নির্দেশ করতে "বহিঃশহর" (exurb)পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে বহিঃশহর বলতে উপশহর ছাড়িয়ে দূরে অবস্থিত ও অপেক্ষাকৃত কম জনঘনত্ববিশিষ্ট লোকালয়গুলিকে "বহিঃশহর" নামে ডাকা হয়, যেখান থেকে নিত্যযাত্রীরা মূল শহরে যাওয়া-আসা করে।[৩]
কারণ
[সম্পাদনা]যখনও কোনও অঞ্চলের শ্রমিক বা কর্মজীবীরা যেখানে কাজ করে, সেখানে বসবাস করার আর্থিক সামর্থ্য রাখে না, তাদেরকে অপেক্ষাকৃত কম খরচে জীবনযাপনের সুবিধাবিশিষ্ট অপর একটি শহরে বাস করতে হয়। এভাবে নিত্যযাত্রী শহরগুলি গড়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, ২০শ শতাব্দীর শেষভাগে এসে ডট-কম বুদ্বুদ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন বুদ্বুদ ক্যালিফোর্নিয়ার মহানগর এলাকাগুলিতে আবাসনের ব্যয় নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি পায়, ফলে ঐ মহানগরগুলির সংলগ্ন লোকালয়গুলিতে নিত্যযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ২০০৩-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ] ক্যালিফোর্নিয়ার ট্রেসি শহরটির ৮০%-এরও বেশি অধিবাসী সান ফ্রান্সিসকো উপসাগর এলাকাতে কর্মরত ছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে নিত্যযাত্রী শহরের জন্ম হতে পারে। ১৯৮০-র দশকে ইস্পাত শিল্পে ধসের কারণে ওহাইও-র স্টুবেনভিল ও পশ্চিম ভার্জিনিয়ার উইয়ার্টন শহরগুলি অতীতে স্বাধীন চরিত্রের অধিকারী হলেও বর্তমানে এগুলি বৃহত্তর পিটসবার্গ মহানগরীর নিত্যযাত্রী শহরে পরিণত হয়েছে।[৪]
১৯৮০-র দশকে জাপানে রেল পরিবহন ব্যক্তিমালিকানাধীন হয়ে যাবার পর থেকে ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য ঐসব বেসরকারি রেল কোম্পানিগুলি রেলপথ সংলগ্ন এলাকাগুলিতে নিত্যযাত্রী শহর নির্মাণে ব্যাপক বিনিয়োগ করে ও সেই অনুযায়ী নতুন নিত্যযাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন নতুন রেলস্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি তাদের রেলগাড়ির সময়সূচী উপযোজিত করে নেয়। [৫] এর বিপরীতে উত্তর আমেরিকার নিত্যযাত্রী শহরগুলির অধিবাসীরা সাধারণত ব্যক্তিগত মোটরগাড়িতে করে নিত্যযাত্রা সম্পাদন করে।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Mobilidade: paulistano leva uma hora e meia para ir e voltar do trabalho"। Cidade de São Paulo (Portuguese ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০২১।
- ↑ "ベッドタウンの英語・英訳 - 英和辞典・和英辞典 Weblio辞書" ["Beddo Tawn" - English Translation, English-Japanese Dictionary, Weblio Dictionary] (Japanese ভাষায়)। ১২ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ Berube, Alan (২০০৬)। Finding Exurbia: America's Fast-Growing Communities at the Metropolitan Fringe (পিডিএফ)। Brookings Institution। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৯।
- ↑ "Archived copy" (পিডিএফ)। Office of Management and Budget। ২০১৭-০১-২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-৩১ – National Archives-এর মাধ্যমে।
- ↑ Harding, Robin (২০১৯-০১-২৮)। "Rail privatisation: the UK looks for secrets of Japan's success"। Financial Times। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৫।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Central City White Flight: Racial and Nonracial Causes
- Rybczynski, Witold (Nov. 7, 2005). "Suburban Despair". Slate.
- Spectorsky, Auguste C. (১৯৫৫)। The Exurbanites। Lippincott, Philadelphia। OCLC 476943।
- Lyman, Rick (2005). Living Large, by Design, in Middle of Nowhere The New York Times